টাইমসনিউজ ডেস্ক:
তামাকের বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেন, তামাক কোম্পানিগুলো সরকারকে যে রাজস্ব দেয়, তার চেয়ে অনেক বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় স্বাস্থ্য খাতে। তামাক ও তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার যদি প্রতিরোধ করা যায়, তাহলে ক্যান্সারসহ তামাকজনিত বিভিন্ন রোগের পেছনে আমাদের এতো অর্থ ব্যয় করতে হবে না। রোগ প্রতিরোধে নজর দিতে হলে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ আমাদের গড়তেই হবে।
উপদেষ্টা আজ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস-২০২৫ উদ্যাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তামাক নিয়ন্ত্রণ ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশনে আমরা স্বাক্ষর করেছি, অথচ একইসঙ্গে তামাক কোম্পানিগুলোর বোর্ডেও সরকার আছে; যাতে তাদের ব্যবসা ভালোভাবে চলে। এই বৈপরীত্য কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমাদের এসব কথা স্পষ্টভাবে বলা উচিত। এখন যদি আমরা এসব বলতে না পারি, তাহলে আর কখনোই পারব না।
উপদেষ্টা আরো বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে কার্যকর করতে হলে সংশোধন করতে হবে; এ নিয়ে কাজ চলছে। তামাক কোম্পানিগুলো কোমলপ্রাণ কিশোর-তরুণদের নানা উপায়ে তাদের পণ্যের প্রতি আকৃষ্ট করছে। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের এসব বাধা মোকাবিলা করতে হবে।
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ
উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন,
ই-সিগারেট আমদানি নিষিদ্ধ হলেও তামাক কোম্পানিগুলো তা দেশে উৎপাদনের চেষ্টা করছে। তাদের কারখানাগুলোতে শ্রমিকদের শোষণ করা হচ্ছে। সাধারণত নদীর পাশের উর্বর জমিতে তামাক চাষ করা হয়, এতে বনজ সম্পদের ক্ষতির পাশাপাশি মাছের প্রজননও হ্রাস পায়। একইসঙ্গে শিশু-কিশোর ও নারীদের স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মোঃ সায়েদুর রহমান বলেন, সকল নেশার প্রবেশদ্বার হচ্ছে ধূমপান। ধূমপানবিরোধী লড়াইয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বড় ভূমিকা থাকা উচিত। আট-দশ বছর বয়স থেকেই শিশুদের শেখাতে হবে, ধূমপান শরীরে কী ধরণের ক্ষতি করে। তিনি আরো বলেন, তামাক কোম্পানির প্রভাব ধীরে ধীরে রাষ্ট্রের ওপরও পড়ছে। এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য শক্ত অবস্থান নিতে হবে।
সভায় স্বাস্থ্য সচিব মো. সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে রেল সচিব ফাহিমুল ইসলাম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
সভা শেষে বাংলাদেশে তামাক নিয়ন্ত্রণে প্রশংসনীয় অবদান রাখায় বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বিজয়ীদের মধ্যে ‘তামাক নিয়ন্ত্রণে জাতীয় সম্মাননা ২০২৫’ প্রদান করা হয়।